কাউখালী প্রতিনিধি।
দক্ষিণাঞ্চলের নার্সারিতে চারা উৎপাদনের বৃহত্তম কেন্দ্র হচ্ছে পিরোজপুরের কাউখালী, স্বরূপকাঠি, ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর সহ উপজেলার বিভিন্ন নার্সারি থেকে চারা বাজারজাত করার জন্য নিয়ে আসা হয় কাউখালীর হাটে।
সপ্তাহে শুক্র ও সোমবার কাউখালীর হাটে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ফলজ চারা ক্রয় বিক্রয় করা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত চারা কেনাবেচার মৌসুম। তবে আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে চারা বেশি বেচাকেনা হয়। কাউখালী থেকে নার্সারিতে উৎপাদিত চারা শুধু কাউখালী নয়, এখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রেতারা পাইকারি ও খুচরা মূল্যে রোপন কিংবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়।
এ এলাকার নার্সারিতে উৎপাদিত চারাগুলো টেকসই। ফলে দেশের পিরোজপুর,বাগেরহাট, খুলনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণ ও মধ্য অঞ্চলে প্রতিটি উপজেলায় এ এলাকার নার্সারি চারা সরবরাহ করা হয়। হাটবাজারে কেনা বেচা ছাড়াও পাইকাররা সরাসরি এলাকার বিভিন্ন নার্সারিতে গিয়ে তাদের পছন্দমত বিভিন্ন প্রজাতির চারা কিনে নিয়ে যান।
এলাকার নার্সারিতে উৎপাদিত চারার মধ্যে রয়েছে, আম, কাঁঠাল, লিচু, নারকেল, পেয়ারা, ছবেদা, লকোট, আমড়া, আমলকি, জলপাই, বড়ই, মাল্টা, সুপারি,জামসহ ২০/২৫ প্রজাতির ফলের চারা বিক্রয় করা হয়। এছাড়া রেন্টটি, মেহগনি, চাম্বল, আকাশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ চারা কেনাবেচা হয়। ব্রিটিশ আমল থেকে কচা, সন্ধ্যা ও চিড়াপাড়া নদীর কল ঘেঁষে অবস্থিত কাউখালী বন্দরের চারারহাট।
চারা কিনতে আসা ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মোহাম্মদ কিবরিয়া জানান, চারা মৌসুমে প্রতিবছর কাউখালী হাট থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন প্রজাতির চারা কিনে নিয়ে যায়।
মঠবাড়ীয়া উপজেলা থেকে চারা ক্রয় করতে আসা মোঃ ছগির হোসেন বলেন, আমরা প্রতি মৌসুমে দলবল সহ কাউখালী চারার হাট থেকে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ফলজ চারা ক্রয় করে নিয়ে যায়। এখানকার উৎপাদিত চারা গুলোর মান খুবই ভালো।
চারা ব্যবসায়ী আবু হানিফ জানান, তিন বিঘা জমির উপর নার্সারিতে বিভিন্ন প্রজাতির চারা উৎপাদন করে বছরের একটি মৌসুমে ৪/৫ লাখ টাকা আয় করেন। স্বরূপকাঠি উপজেলার নার্সারি মালিক সৌরভ ব্যাপারী জানান, প্রতি হাটে প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিভিন্ন প্রজাতির চারা আমি বিক্রি করি।
চারা ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ মনির জানান, প্রকারভেদে প্রতি পিচ আমের চারা ১৫০/২৫০ টাকা, প্রতি পিচ মালটা২০০/৪০০ টাকা, নারকেল চারা ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা, সুপারি চারা ২৫/৫০ টাকায় বিক্রয় করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোমা দাস জানান, কাউখালীতে স্থানীয় পর্যায়ে নার্সারিতে উৎপাদিত চারাগুলির মান খুবই ভালো। আমরা সার্বক্ষণিক নার্সারীর মালিকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি।